জাহানারা কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার আমাদের আছে- • কম্পিউটার প্রশিক্ষন • কম্পিউটার কম্পোজ • কম্পিউটার সাভিসিং • ইন্টারনেট • ছবি তোলা • আনলাইন ভারতের ভিসা আবেদন • আনলাইন চাকরির আবেদন • পরিক্ষার ফলাফল • আনলাইনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সহ ভবভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভতির আবেদন • এ ছাড়া সকল প্রকার কম্পিউটারের কাজ করা হয় #

বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

আব্দুল হাই এর পরিবার শুধু মাত্র স্মুতি নিয়েই বেঁচে আছে

আনিসুর রহমান
====================
নিহত আব্দুল হাই তরফদার। আনুমানিক ইং ১৯৪৭ সালে যশোর সদর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের দৌলতদিহি গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মৃত মেছের আলী তরফদার ও মাতা সমেত্ত্বভানের অতি আদরের সন্তান ছিলেন তিনি। শৈশব থেকে যখন কৈশরে পা রাখেন, মূলত তখন থেকেই আব্দুল হাই ছিলেন মানব দরদী প্রকৃতির। প্রতিটি মানুষের বিপদের পাশে ছুটে যেতেন তিনি।
মেধা ও দক্ষতার সাথে কৈশরে তিনি দৌলতদিহি প্রাইমারী স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণী পাশ এবং পরে হৈবতপুরের শাহাবাজপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণী ও ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার হাই স্কুল থেকে এস এস সি পাশ করেন। এরপর একই জেলার কালিগঞ্জের একটি কলেজ থেকে এইচ এস সি পাশ করেন।
১৯৭১ সালে যখন এদেশে পাক-হানাদার বাহিনী সাধারণ নিরিহ মানুষের উপর অত্যাচার নির্যাতন, মা-বোনেদের সভ্রম লুট, হত্যা ও ঘর বাড়িতে অগ্নিসংযোগের তান্ডব লিলা চালায় ঠিক সেই মূহুর্তে মানবদরদী আব্দুল হাই লেখাপড়াকে পিছনে ফেলে ঝাপিয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। যদিও সরাসরি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে ওই সময়ের মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যুদ্ধের ট্রেনিং না করলেও পিছিয়ে থাকেনি আব্দুল হাই। তিনি ওই সময় মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে একাত্মতা ঘোষনা করে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন পাক-হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে। মুরব্বীদের ভাষ্য মতে, আব্দুল হাই ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের আগে থেকেই ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সৈনিক হিসেবে কাজ করেছিলেন। এরপর ১৯৭৬ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ডাকে ঢাকার রেসক্রোস ময়দানে যশোরের সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমান বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের হাত ধরে বিএনপিতে যোগদান করেন। সেই থেকে মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় যশোর সদরের কাশিমপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি হিসাবে দীর্ঘ ১৫ বছর দায়িত্ব পালন করতে সমর্থ হয়েছিলেন। এরই মধ্যে তিনি পর্যায় ক্রমে চুড়ামনকাটি সোনালী ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, চুড়ামনকাটি বাজার কমিটির দীর্ঘ দিন সভাপতি, বারীনগর কাঁচা বাজার হাট মালিক, খুলনা পাট কল মিলের সদস্য এবং কাজী নজরুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য সহ এলাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত থাকার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন। সর্বশেষ ২০০১ সালে কাশিমপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক পদে অধিষ্টিত থাকাকালে ২০০৫ সালের ৭ সেপ্টেম্বর মানুষরুপি কিছু হায়েনার ভয়াল থাবায় মানবদরদী ওই মানুষটি গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়ে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হন। দীর্ঘ ৯ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ঢাকা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল হাসপাতালে পৌছানো মাত্রই ১৬ সেপ্টেম্বর রাত ১১ টার সময় তিনি এ দুনিয়া থেকে বিদায় নেন। মৃত্যুর সময় তিনি রেখে যান স্ত্রী, ৬ ভাই ২ বোন ও ৫ পুত্র সন্তানসহ অসংখ্য ভক্ত। 
সেদিন ছিল বুধবার। যশোর সদরের কাজী নজরুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের তুচ্ছ একটি ঘটনায় দ্বন্দ বাধে কাশিমপুর ইউনিয়নের দৌলতদিহি ও হৈবতপুর ইউনিয়নের ছোট হৈবতপুর গ্রামের ছাত্রদের মধ্যে। পরে এটি গ্রাম পর্যায়ে পৌছালে দু’গ্রামবাসী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হলেও দু’গ্রামবাসীর মধ্যে চরম উত্তেজনা অব্যহত থাকে। এ সময় দু’ ইউনিয়নের রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ সম্মিলিত ভাবে উদ্দ্যোগ নেয় ঘটনাটি মিমাংসার জন্য। মিমাংসা টেবিলে ওই কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য হিসাবে উপস্থিত করার জন্য সু-পরিকল্পিত ভাবে আব্দুল হাইকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ডাকা হয়। সরল বিশ্বাসী আব্দুল হাই ওই সময় ছুটে যান কলেজের উদ্দেশ্যে। তিনি মটর সাইকেলযোগে কলেজের নিকট পৌছালে পূর্বে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা এক দল চিহ্নিত সন্ত্রাসী আব্দুল হাই তরফদারের মটরসাইকেলের গতিরোধ করে। তারা এ সময় তাকে ছোট হৈবতপুর গ্রামের মধ্যে ধরে নিয়ে যায়, এবং এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করে মৃত ভেবে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে গ্রাম বাসী তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করে। 
মহান এই ব্যক্তিটিকে স্বরণ রাখার জন্য প্রতি বছর ১৬ সেপ্টেম্বর আসলেই পরিবারের পক্ষ থেকে পালন করা হয় তার মৃত্যু বার্ষিকী। হাজার হাজার মানুষ তাদের এই প্রিয় মানুষটির মৃত্যু বার্ষিকীতে উপস্থিত হয়ে তার জন্য দোয়া কামনা করে এবং ধিক্কার জানায় সেই সব নরপশুদের। যারা নির্মম ভাবে হত্যা করেছিল তাদের এই কাছের মানুষটিকে। দীর্ঘ ১০ বছরেও ভুলতে পারিনি আব্দুল হাই তরফদারের পরিবারের সদস্যসহ এলাকাবাসী। এখনো নিহতের স্ত্রী ও সন্তানেরা ভুলতে পারিনি তার রেখে যাওয়া স্মৃতি। তাইতো আজও সেই দুর্বিসহ স্মৃতি মনে করে কেঁদে ওঠে তারা। তাদের জন্য শুধু একটায় সান্তনা খুনিদের শেষ পরিনিতি কি হয় তা দেখার জন্য।


কোন মন্তব্য নেই:

যে কোন প্রকার নিউজ, মতামত, অভিযোগ পাঠাতে পারেন আমাদের কাছে। যেগাযোগ : ০১৭১৯৯২০৯৮০, ০১৯১৮২৯৪২২৯। ইমেল: jc.com80@gmail.com
আমার মত যারা ইংরেজীতে দূর্বল তাদের জন্য আজ আমি একটা পদ্ধতি এনেছি -যা দিয়ে খুব সহজে ইংরেজী থেকে বাংলায় অনুবাদ করা যাবে।
১. এখানে ক্লিক করুন।