জাহানারা কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার আমাদের আছে- • কম্পিউটার প্রশিক্ষন • কম্পিউটার কম্পোজ • কম্পিউটার সাভিসিং • ইন্টারনেট • ছবি তোলা • আনলাইন ভারতের ভিসা আবেদন • আনলাইন চাকরির আবেদন • পরিক্ষার ফলাফল • আনলাইনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সহ ভবভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভতির আবেদন • এ ছাড়া সকল প্রকার কম্পিউটারের কাজ করা হয় #

আমাদের যশোর

(ফোন কোড নং-০৪২১)
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের জন্ম ২৬শে ফেব্রুয়ারি ১৯৩৬, যশোর জেলার অর্ন্তঃগত নড়াইল মহকুমার মহিষখোলা গ্রামে। পিতা আমানত শেখ ছিলেন কৃষক এবং মাতা জেন্নাতুন নেসা ছিলেন গৃহিণী। শৈশবেই বাবা-মা হারিয়ে অনেকটা সংসার বিরাগী জীবন যাপনে অভ্যস্থ হয়ে পড়েন। সংসারের প্রতি মন ফিরিয়ে আনতে অবিভাবকরা তাকে ১৯৫২ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে বিয়ে করান। স্ত্রী তোতা বিবির বয়স তখন ১২ বছর। ১৯৫৪ সালের শেষভাগে জন্ম নেয় তাদের প্রথম সন্তান হাসিনা খাতুন। সংসারে অভাবের ছোঁয়া লাগায় দিশেহারা হয়ে যোগ দেন মুজাহিদ বাহিনীতে। ২৬শে ফেব্রুয়ারি ১৯৫৯, তদানিন্তন ইপিআর-এ সৈনিক হিসেবে যোগদান করেন। তার ই পি আর ক্রমিক নম্বর ছিল ৯৪৫৯। ১৫ ই নভেম্বর ১৯৬৪, জন্মগ্রহণ করে তার দ্বিতীয় সন্তান শেখ মোঃ গোলাম মোস্তফা কামাল। কিছুদিন পরেই আত্মীয়-স্বজনদের অনুরোধে বিয়ে করেন মৃত শ্যালকের স্ত্রী ফজিলাতুন্নেসাকে। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে দিনাজপুর সেক্টরে যুদ্ধরত অবস্থায় আহত হন। যুদ্ধ শেষে তিনি 'তকমা-ই-জং' ও 'সিতারা-ই-হারব' মেডেল লাভ করেন। মার্চ ১৯৭১এ তিনি ছুটি ভোগরত ছিলেন গ্রামের বাড়িতে। পাকিস্তানী বাহিনীর গণহত্যার খবর পেয়ে অসুস্থ অবস্থায় চুয়াডাঙ্গায় ইপিআর-এর ৪নং উইং এ নিজ কোম্পানির সাথে যোগ দিয়ে বিদ্রোহ করেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। সেক্টর গঠন হলে তাদের উপর ন্যস্ত হয় ৮নং সেক্টরের দায়িত্ব। তিনি নিয়োগ পান বয়রা সাব-সেক্টরে। এই সাব-সেক্টরের অধীনে গোয়ালহাটি, ছুটিপুর ঘাট, ছুটিপুর সেনাক্যাম্প, বরনী আক্রমণে অংশ নেন এবং বীরত্ব প্রদর্শন করেন। বরনীতে নিজের জীবনের ঝুকি নিয়ে সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার জীবন রক্ষা করেন। ৫ই সেপ্টেম্বর ১৯৭১, সুতিপুর প্রতিরক্ষা অবস্থানের সামনে ষ্ট্যান্ডিং পেট্রোলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালনের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আক্রমণ নস্যাৎ করে দেন প্রায় একাই। আহত অবস্থায় অধীনস্থ সৈনিকদের নিরাপদে পিছনে পাঠিয়ে দেন এবং শত্রুর মোকাবেলা অব্যাহত রাখার সময় শাহাদাত বরণ করেন। পরবর্তীতে সহযোদ্ধারা তার মৃতদেহ উদ্ধার করে সীমান্তবর্তী যুদ্ধক্ষেত্র কাশীপুরে সমাহিত করে। স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার বীরত্বের স্বীকৃতি স্বরুপ তাকে 'বীরশ্রেষ্ঠ' খেতাবে ভূষিত করে।

 যশোর বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে পশ্চিমবঙ্গের (ভারত) সীমান্তের কোল ঘেঁষে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা। ছোট-বড় ৮টি উপজেলা নিয়ে গঠিত বিস্তীর্ণ এ ভূখন্ড জুড়ে আজ গড়ে উঠেছে জনপদ, হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা, সুরম্য অট্টালিকা। একদিকে যেমন রয়েছে আধুনিককালে নির্মিত ঘরবাড়ি অন্যদিকে রয়েছে প্রাচীন কালের নিদর্শন। বারবাজার, লাউজানি প্রভৃতি স্থানে আজও প্রাচীনকালের সেই সাক্ষ্য বহনকারী  নিদর্শন আবিষ্কৃত হচ্ছে। এ ছাড়াও জেলার বিভিন্ন স্থানে হয়ত লুকিয়ে আছে আরো কত প্রাচীন নিদর্শন; তার খবর কে রাখে! কিন্তু এমন একদিন ছিল যখন আধুনিক কালের ঘরবাড়ি কিংবা এ সকল প্রাচীন নিদর্শন তো দূরের কথা কোন জনপদই ছিল না এ সমগ্র ভু-খন্ডে। সমগ্র অঞ্চলই তখন বন-জঙ্গলে ছিল পরিপূর্ণ, যেখানে বাস করতো মানুষের স্থলে বাঘ- ভাল্লুক স্বরীসৃপ।| ভূ-তত্ত্ববিদ এবং ঐতিহাসিকগণ প্রমাণ করেছেন যে তারও পূর্বে এখানে কোন ভূ-খন্ডরই অস্তিত্ব ছিল না; সমুদ্রের মধ্যে ছিল বিলীন। শুধু যশোর কেন পশ্চিমে ভাগিরথী (ভারতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত একটি নদী), উত্তরে পদ্মা, পূর্বে মেঘনা এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর- এর মাঝখানে যে বিস্তীর্ণ ভূ-খন্ড বর্তমানে বিরাজ করছে তা এক অজানা অতীতকালে সমুদ্রের নীল জলে ছিল নিমগ্ন। গঙ্গা নদী তার শাখা-প্রশাখার মাধ্যমে বালি, কাকর ও পলির সাহায্যে এ ভূ-ভাগ গঠন করেছে। গঙ্গার পলি দ্বারা গঠিত এ ভূ-খন্ডটি গাঙ্গেয় উপদ্বীপ বা Gangetic delta বা ব-দ্বীপ বলে পরিচিত। তাই যশোর ভূ-খন্ডের উৎপত্তির ইতিহাস ব-দ্বীপের গঠন প্রণালী ও উৎপত্তির ইতিহাসের সাথে একসূত্রে গাঁথা।
বৈদিক বিবরণী হতে জানা যায় যে কৌশিকী নদী যেখানে গঙ্গা হতে বের হয়েছিল, তা সমুদ্রের অতি নিকটবর্তী ছিল। অর্থাৎ সমগ্র ব-দ্বীপ তখন সমুদ্রের জলে নিমগ্ন ছিল। বৈদিক সাহিত্যের পরবর্তীকালের বিবরণী থেকে আরও জানা যায় যে গঙ্গা নদীই এই ভূ-খন্ডের সৃষ্টি করেছে। তাই বৈদিক সাহিত্যে গঙ্গাকে মাতা হিসেবে সম্মানিত করা হয়েছে। যাহোক ভূ-তত্ত্ববিদ ও ঐতিহাসিকগণের আলোচনায় ব-দ্বীপের গঠন প্রণালী ফুটে উঠেছে। তাদের বিবরণী হতে জানা যায় “হিমালয়ের পাদদেশ হতে অপরিমিত পর্বতরেণু বহন করে গঙ্গা সমুদ্রে পতিত হয় এবং বালি, কাকর, পলির সাহায্যে ভূ-ভাগ গঠন হতে থাকে। মুর্শিদাবাদ বা তারও উত্তর পশ্চিম দিক থেকে গঙ্গা এই ভূমি গঠনের কাজ শুরু করেছিল বলে অনুমিত হয়। এই ভূমি গঠনকার্য ক্রমাগতভাবে চলতে থাকে, যার ফলে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে সমুদ্রের মধ্যে ভূমির পর ভূমিখন্ড জাগতে থাকে। ভূমি গঠন কার্য যতই দক্ষিণ দিকে সমপ্রসারিত হতে থাকে গঙ্গা ততই অসংখ্য শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত হয়ে পড়ে। তখন শাখা-প্রশাখার মাধ্যমে গঙ্গা ভূমি গঠনকার্য চালাতে থাকে। অর্থাৎ প্রথমে গঙ্গার শাখা পদ্মা-ভাগিরথী, পরে এদের শাখা-প্রশাখা ভূমিগঠনের দায়িত্ব গ্রহণ করে। গঙ্গা এই ভূমিগঠনের কাজ আজও অব্যাহত রেখেছে, যার ফলে বাখরগঞ্জ-খুলনার নিম্নবর্তী স্থানে আজও চর জাগতে দেখা যায়।

যশোর জেলা এই ব-দ্বীপের একটি অংশ। তাই বলা যায় পদ্মার শাখা ভৈরব ও কপোতাক্ষের পলি দ্বারা এ ভূ-ভাগ গঠিত। হিমালয়ের পাদদেশ হতে পর্বতরেণু বহন করে এনে গঙ্গা তার শাখা-প্রশাখার মাধ্যমে যেহেতু এই ব-দ্বীপ সৃষ্টি করেছে আর যেহেতু ভৈরব ও কপোতাক্ষ গঙ্গার শাখা, পদ্মারই দুটি ধারা এবং তা যশোর জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সেহেতু এ নদী দুইটিই যে এ ভূ-খন্ড গঠন করেছে তা আর প্রমাণের অপেক্ষা রাখে না। তাছাড়াও বাংলার ইতিহাস পর্যালোচনা করে জানা যায় যে, ভৈরব ব-দ্বীপ অঞ্চলের সর্ব প্রধান দীর্ঘ নদ। সরকারী রিপোর্টে দেখা যায় যে, যেখানে ভৈরব থেকে কপোতাক্ষের উৎপত্তি হয়েছিল সেখানে অর্থাৎ চৌগাছা থানার তাহিরপুরের নিকটে ১৭৯৪ সালে (প্রায় দুশ বছর পূর্বে) চর পড়েছিল। যশোরের তৎকালিন কালেক্টর (তৎকালিন জেলা প্রশাসনের দায়িত্বে নিয়োজিত সরকারী কর্মকর্তা) বাঁধ দ্বারা কপোতাক্ষ স্রোত বন্ধ করে বারবাজার-যশোর প্রভৃতি শহরের জন্য ভৈরবকে অব্যাহত রাখার চেষ্টা করেন। কিন্তু দুর্বার স্রোত সে চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়। তাহিরপুরের নিকট বাঁধটা বাদ দিয়ে মূল স্রোত দক্ষিণ মুখে কপোতাক্ষ পথে প্রবাহিত হতে থাকে। এ থেকে অনুমাণ করা আযৌক্তিক হবে না যে ভৈরব এই চর সৃষ্টির কাজ অতি প্রাচীনকাল থেকে শুরম্ন করেছিল। আর কপোতাক্ষ যেহেতু ভৈরব থেকেই সৃষ্ট সেহেতু তার ক্ষেত্রেও ঐ একই কথা প্রযোজ্য বলে ধরে নেয়া যায়। এক সময় যে ভৈরব ছিল প্রকান্ড নদী, এক সময় যে কপোতাক্ষ ভৈরবের সিংহ ভাগ জল নিয়ে প্রচন্ড গতিতে প্রবাহিত হত, আজ তারা কঙ্কালসার হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। ভৈরব বার্ধক্যে পা দিয়েছে এবং বুড়ি ভৈরব নাম ধারন করেছে। এ ভূ-খন্ডের জন্ম দিতে যেয়েই নদী দুটির আজ এ পরিণতি।
প্রায় পঁচিশ হাজার বছর পূর্বে গঙ্গা ভূমি গঠনের কাজ শুরু করেছিল বলে পন্ডিতগণ মনে করেন। এ থেকে বোঝা যায় যে ভৈরব ও কপোতাক্ষ তারও পর হতে ভূমি গঠনের কাজ শুরু করেছিল। যশোর অঞ্চলের ভূমির বয়স নির্ণয় করা না হলেও পার্শ্ববর্তী স্থানের ভূ-খন্ডের নির্ণীত বয়সের সাথে তুলনা করে বলা যায় যে এখানকার ভূ-খন্ডের বয়স বিশ হাজার বছরের কম নয়। প্রায় বিশ হাজার বছর পূর্বে যশোর ভূ-খন্ডের সৃষ্টি হয়েছিল, এর অর্থ এ নয় যে জেলার সমগ্র অংশই একদিনে দৈবক্রমে সৃষ্টি হয়েছিল। ভূমি গঠনের প্রাথমিক যুগে জেলার অধিকাংশ স্থান জলে মগ্ন থাকত; মাঝে মাঝে বিরাজ করত ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র দ্বীপ। শুধু যশোর নয় গোটা ব-দ্বীপই তখন অসংখ্য ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র দ্বীপে বিভক্ত ছিল। ক্রমেই এই ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র দ্বীপগুলি উন্নত হতে থাকে এবং কয়েকটি মিলে এক একটি বড় বড় দ্বীপ সৃষ্টি করতে থাকে। এ অঞ্চল যে একদিন ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র দ্বীপে বিভক্ত ছিল তা আজও এখানকার অসংখ্য খাল-বিল-হাওড়-বাওড় ও মৃত নদী প্রমাণ বহন করে চলেছে। চৌগাছা থানার বেড়গোবিন্দপুর গ্রামটি আজও একটি দ্বীপ আকারে সবার চোখে ধরা পড়ে। তাছাড়াও বর্ষার সময় চারদিক যখন পানিতে ভরে যায় তখন এ অঞ্চলের দ্বীপের অস্তিত্ব অনেকটা আঁচ করা যায়। যাহোক ক্রমেই দ্বীপে জন্মাতে থাকে বিভিন্ন প্রকারের গাছ-পালা যার ফলে সমগ্র ব-দ্বীপটিই একটি গহীন জঙ্গলে পরিণত হয়। এটিই পরবর্তীতে সুন্দরবন নামে পরিচিতি লাভ করে। অর্থাৎ আজকের এই যশোর জেলা একদিন সুন্দরবনেরই একটি অংশ ছিল। যদিও আজ এ কথার তেমন কোন বাস্তব প্রমাণ উপস্থাপন করা দুঃসাধ্য তথাপিও এ অঞ্চল যে এককালে সুন্দরবনেরই একটি অংশ ছিল তা ঐতিহাসিকগণ অনুমান করেন। তাছাড়াও কূপ খনন এবং টিউবওয়েলের পাইপ বসানোর সময় এ অঞ্চলে মাটির বহু নীচ থেকে বিভিন্ন গাছের পাতা এবং কাঠের টুকরা পাওয়া যায়। এ গুলি এ অঞ্চলে বনভূমির অস্তিত্বেরই সাক্ষ্য দেয়। যা হোক ক্রমেই বাঘ-ভাল্লুক স্বরীসৃপ ও বিভিন্ন প্রজাতির পাখিতে ভরে যায় এ বনভূমি। কিন্তু এই বনভূমি তখনও মানুষের বসবাস উপযোগী হয়ে উঠেনি। প্রায় পাঁচ হাজার বছর পূর্বেও গঙ্গার নিম্নাঞ্চল স্যাঁতসেতে ও মনুষ্য বাসের অনুপযোগী ছিল। ক্রমেই ভূপরিভাগ উঁচু হতে থাকে এবং তখন এ অঞ্চলে বর্তমানে যে সমস্ত নিম্ন জাতি বসবাস করে সেই নমশুদ্র-পোদ-চন্ডাল-কৈবর্ত্য-হাড়ি-ডোম-বাগতি-বাউরি প্রভৃতি জাতের মানুষ এসে বসবাস গড়ে তুলতে থাকে। বাগদীদের বাস ছিল বলে যশোর প্রভৃতি অঞ্চল বাগড়ী নমে পরিচিত ছিল। নমশুদ্র-পোদ-চন্ডাল-কৈবর্ত্য এরা সকলেই জাত চাষা। এ অঞ্চলে এসে এরা বনজঙ্গল পরিস্কার করে কৃষি কাজ শুরু করে এবং স্থায়ী আবাস রচনা করে। অর্থাৎ এরাই এ অঞ্চলের প্রথম বাসিন্দা বা আদি বাসিন্দা। এ জাতগুলির বাসভূমি ছিল উত্তর বঙ্গ (রাজশাহী, রংপুর, বগুড়া প্রভৃতি স্থান) এবং ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চল (বর্ধমান, বীরভুম, বাকুড়া)। জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষিযোগ্য জমির সন্ধানে সম্ভবত তারা এ অঞ্চলে আসে। আবার অনেকে মনে করেন অন্য কোন জাতের তাড়া খেয়ে তারা এ অঞ্চলে আসতে বাধ্য হয়। তারা কি কারণে এখানে এসেছিল সে বিতর্ক রেখে কখন বা কোন সময় এসেছিল সে দিকে দৃষ্টি দেওয়া যাক। এ বিষয়ে নির্দিষ্ট দিন তারিখ নির্ধারণ করার মত কোন ঐতিহাসিক তথ্য আজও উদ্ঘাটিত হয়নি। তবে ঐতিহাসিকগণ অনুমাণ করেন প্রায় তিন হাজার বছর পূর্বে এ জাতগুলি এ অঞ্চলে আবাস  গড়ে তোলে। অর্থাৎ এ অঞ্চলের জনবসতির ইতিহাস প্রায় তিন হাজার বছরের। লোক বসতি গড়ে উঠার সাথে সাথে এ অঞ্চলের দ্বীপগুলির নামকরণ হতে থাকে। প্রাচীনকালে এ সকল দ্বীপের কি কি নাম ছিল তা আজ আর জানা যায় না। তবে বল্লাল সেনের রাজত্বকালে (১১৫৮ খৃঃ) সমগ্র ব-দ্বীপ কতটি প্রধান দ্বীপে বিভক্ত ছিল এবং তাদের কি কি নাম ছিল তার বিবরণ পাওয়া যায় এড়ুমিশ্রের “কারিকা” নামক সংস্কৃত গ্রন্থে। “কারিকা” অনুযায়ী নব-দ্বীপ রাজ্য (গোটা ব-দ্বীপ) বারটি প্রধান দ্বীপে বিভক্ত ছিল। এ দ্বীপগুলি হল-অগ্রদ্বীপ, মধ্যদ্বীপ, চন্দ্রদ্বীপ, নবদ্বীপ, এড়ুদ্বীপ, প্রবালদ্বীপ, কুশদ্বীপ, অন্ধ্রদ্বীপ, বৃদ্ধদ্বীপ, সুর্যদ্বীপ, জয়দ্বীপ ও চন্দ্রদ্বীপ। মুর্শিদাবাদ ও তার নিকটবর্তী স্থান নিয়ে অগ্রদ্বীপ গঠিত এবং তারপর হতে দক্ষিণ দিকে সমুদ্র পর্যনত্ম বাদবাকী এগারটি দ্বীপ বিসত্মৃত। এ দ্বীপগুলির মধ্যে অন্ধ্রদ্বীপ ও সূর্যদ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে আজকের এই যশোর জেলা। চৌগাছা, ঝিকরগাছা, শার্শা, মনিরামপুর, কেশবপুর প্রভৃতি স্থান অন্ধ্রদ্বীপ এবং বার বাজার, খাজুরা, মুড়লী প্রভৃতি স্থান সুর্যদ্বীপের অন্তর্গত।
একদিন যেখানে কোন ভূ-খন্ডই ছিলনা সেখানে প্রথমে দ্বীপ আকারে ভূ-খন্ডের উৎপত্তি, তাতে বন-জঙ্গলের সৃষ্টি, তারপর পশু পাখির বাস, সবশেষে বনজঙ্গল পরিষ্কার করে মানুষের বসবাস। এভাবেই যশোর তথা ব-দ্বীপের ইতিহাসের পদযাত্রা। এ চলার গতি কোনদিন থেমে থাকেনি আগামিতে আরও এগিয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক।| তবে অধুনা পরিবেশ বিজ্ঞানীরা অনুমান করছেন যে, আগামী কয়েক দশকের মধ্যে যশোর সহ বাংলাদেশের নিম্নাঞ্চল সমূদ্রগর্ভে বিলীন হবে।

যশোর নামকরণ :
যশোর, সমতটের একটা প্রাচীন জনপদ। নামটি অতি পুরানো। যশোর নামের উৎপত্তি সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত পাওয়া যায়। যশোর (জেসিনরে) আরবি শব্দ যার অর্থ সাকো। অনুমান করা হয় কসবা নামটি পীর খানজাহান আলীর দেওয়া (১৩৯৮ খৃঃ)। এককালে যশোরের সর্বত্র নদী নালায় পরিপূর্ণ ছিল। পূর্বে নদী বা খালের উপর সাকো নির্মিত হতো। খানজাহান আলী বাঁশের সাকো নির্মাণ করে ভৈরব নদী পার হয়ে মুড়লীতে আগমন করেন বলে জানা যায়। এই বাঁশের সাকো থেকে যশোর নামের উৎপত্তি। তবে এই মতে সমর্থকদের সংখ্যা খুবই কম। ইরান ও আরব সীমান্তে একটি স্থানের নাম যশোর যার সাথে এই যশোরের কোন সম্পর্ক স্থাপন করা যায় না। খানজাহান আলীর পূর্ব থেকেই এই যশোর নাম ছিল। অনেকে অভিমত ব্যক্ত করেন যে, প্রতাপদিত্যের পতনের পর চাঁচড়ার রাজাদের যশোরের রাজা বলা হত। কেননা তারা যশোর রাজ প্রতাপাদিত্যের সম্পত্তির একাংশ পুরস্কার স্বরূপ অর্জন করেছিলেন। এই মতও সঠিক বলে মনে হয়। জে, ওয়েস্টল্যাণ্ড তাঁর যশোর প্রতিবেদনের ১৯৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন, রাজা প্রতাপাদিত্য রায়ের আগে জেলা সদর কসবা মৌজার অর্ন্তভুক্ত ছিল। বনগাঁ-যশোর পিচের রাস্তা ১৮৬৬-১৮৬৮ কালপর্বে তৈরী হয়। যশোর-খুলনা ইতিহাসের ৭৬ পাতায় লেখা আছে “প্রতাপাদিত্যের আগে লিখিত কোন পুস্তকে যশোর লেখা নাই”। সময়ের বিবর্তনে নামের পরিবর্তন  স্বাভাবিক। অনেক ক্ষেত্রে ঘটেছেও তাই।
আয়তন ও পরিধি :

ভূ-গোলকে ২১’ ৪৫” - ২৩’ ৪৫”  উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯’ ১৫” - ৮৯’ ৫৫” পূর্ব দ্রাঘিমাংশের ভূ-ভাগই যশোর। স্মতর্ব্য, এটি রাজা প্রতাপাদিত্য রায়ের যশোর রাজ্যের পরবর্তীকালের যশোর। কোম্পানী আমলের যশোর। অল্প কথায় ‘গংগা ও ব্রহ্মপুত্রের মধ্যভাগে ব-আকৃতি জায়গাকে উত্তর-দক্ষিণ বরাবর সমান তিন ভাগ করলে মধ্য ভাগের পশ্চিম-উত্তর এবং দক্ষিণ-পূর্ব অংশ ছাড়া অবশিষ্টাংশই যশোর’। তখন জেলার দৈর্ঘ্য ছিল ২৪৪ কিঃ মিঃ (১৪৪ মাইল) এবং প্রস্থ ৭৬’৮ কিঃ মিঃ (৪৮ মাইল) আদি যশোরের আয়তন ছিল ১৪৫৬০ বর্গ কিলোমিটার (৫৬০০ বর্গ মাইল) যার মধ্যে ৪৪৬১’৬ বর্গ কিলোমিটার (১৭৬০ বর্গ মাইল) সুন্দারবন।
যশোর রাজ্য জনপদের জানা ইতিহাস উজ্জ্বল। বর্তমান জেলা যশোর-ঝিনাইদহ-মাগুরা-নড়াইল-খুলনা-বাগেরহাট-সাতক্ষীরা এবং কুষ্টিয়া ও ফরিদপুরের অংশ বিশেষ এবং বনগাঁ মহাকুমা যশোর রাজ্যভুক্ত ছিলো। খুলনা মহাকুমা বাগেরহাট ও সাতক্ষীরাসহ ১৮৮২ খৃঃ যশোর জেলা হতে আলাদা হয়ে স্বতন্ত্র জেলায় উন্নীত হয়। এই কালপর্ব থেকে প্রাক-পাকিস্তান পর্বে যশোর জেলার আয়তন ছিল ৭৬৫০ বর্গ কিলোমিটার (২৯২৫ বর্গ মাইল) কথিত কালপর্বে যশোর সদর, (১৭৮৮) বনগাঁ ও মাগুরা (১৮৪৫), নড়াইল (১৮৬১) এবং ঝিনাইদহ (১৮৬২) এই পাঁচটি মহাকুমা যশোর জেলাধীন ছিল। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্ত হল। বনগাঁ বাদ দিয়ে অন্য চারটি মহাকুমা নিয়ে গঠিত হলো বৃহত্তর যশোর জেলা। যশোর জেলায় যুক্ত হলো বনগাঁর শার্শা ও মহেশপুর থানা। একালে যশোরের আয়তন হলো ৬৫৭৯২ বর্গ কিলোমিটার (২৫৪৭ বর্গ মাইল)। অবকাঠামো ও অপরিবর্তিত প্রশাসনিক ব্যবস্থাধীনে স্বাধীন ও স্বার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটলো। ১৯৮২ সাল উত্তর সামরিক সরকারের পক্ষে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জনাব এইচ এম এরশাদ প্রশাসন গণমুখী করার লক্ষ্যে থানাকে উপজেলায় এবং মহাকুমাকে জেলায় উন্নীত করেন। ঝিনাইদহ জেলা হয় ২৩  ফেব্রুয়ারী ১৯৮৪ সালে। মাগুরা ও নড়াইল জেলা হয় ১ মার্চ ১৯৮৪ সালে। জেলা ঘোষনার পূর্বে থানাসমুহ উপজেলায় উন্নীত হয়। বর্তমান যশোর জেলার আয়াতন ২৫৬৭.৭৭ বর্গ কিলোমিটার (৯৮৭.২২ বর্গ মাইল)। মহাকুমা গুলোর চেহারা এরকম -

Jessore (district) is the first administrative district created in 1781 by the British Colonial East India Company government. During the partition of the subcontinent in 1947 Jessore was also partially divided. It is one of the ancient place in Indian subcontinent and associated with so many historical events. Home of poet Michael Modhusudan Dutta, Rabi, Uday and Amala Sankars, Kamol Dasgupta, and painter SM Sultan.
I want to share some more facts about Jessore. In 16th Century the King Maan Singh of Amer(Now Jaipur, the capital of Rajasthan, Western India) was leading Akbar's Army in Jessore. He found an Idol of God Kaali there( according to writings on stone in Amer Palace, God Kaali appeared in his dreams & ordered him to take idol to his kingdom). He brought the idol, got a temple constructed in his palace in Amer fort and placed the Idol, which became the God Silla Devi(Shila or rock). Silla Devi was given status of Royal Deity in Kingdom of Amer. Today every year people of Jaipur go to her temple on occaision of Sashthi of both navratras ie. two days before Durga Ashtami of Sharad(Durga puja) and Chaitra month. The District administration declares public holiday on both days of the year. The second thing is about Prof. Neel Ratna Dhar of Allahabad University, he was an eminenent scholar, who was from Jessore. He was founder of National Academy of Sciences, a very old society of Scientists founded before partition of India. He got set up Sheela Dhar Institute of Soil Sciences in Allahabad by his own resources later he donated it to Allahabad University. Sheela was his wife who was also a scholar. He remained issue less. He died in 80's at the age of 90, till, his death he was contributing for Agricultural research.
I want to share some more facts about Jessore. In 16th Century the King Maan Singh of Amer(Now Jaipur, the capital of Rajasthan, Western India) was leading Moughal Emperor Akbar's Army in Jessore. He found an Idol of Godess Kaali there( according to the writings on a stone in Amer Palace, Godess Kaali appeared in his dreams & ordered him to take that idol to his kingdom). He brought the idol, got a temple constructed in his palace in Amer fort and placed the Idol, which became the Godess Silla Devi(Shila or rock). Silla Devi was given status of Royal Deity in Kingdom of Amer. Today every year people of Jaipur go to her temple on occaision of Sashthi of both navratras ie. two days before Durga Ashtami of Sharad(Durga puja) and of Chaitra month. The District administration declares public holiday on both days of the year. The second thing is about Prof. Neel Ratna Dhar of Allahabad University, he was an eminent scholar, who was from Jessore. He was founder of National Academy of Sciences, a very old society of Scientists founded before partition of India. He got set up the Sheela Dhar Institute of Soil Sciences in Allahabad by his own resources later he donated it to Allahabad University. Sheela was his wife who was also a scholar. He remained issue less. He died in 80's at the age of 90, till, his death he was contributing for Agricultural research.
যে কোন প্রকার নিউজ, মতামত, অভিযোগ পাঠাতে পারেন আমাদের কাছে। যেগাযোগ : ০১৭১৯৯২০৯৮০, ০১৯১৮২৯৪২২৯। ইমেল: jc.com80@gmail.com
আমার মত যারা ইংরেজীতে দূর্বল তাদের জন্য আজ আমি একটা পদ্ধতি এনেছি -যা দিয়ে খুব সহজে ইংরেজী থেকে বাংলায় অনুবাদ করা যাবে।
১. এখানে ক্লিক করুন।