স্টাফ রিপোর্টার, যশোর : নিজ বিভাগের ছাত্রী ধর্ষণের
অভিযোগে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) পুষ্টি ও
খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ মাহফুজ আল হাসানকে সাময়িক
বহিস্কার করা হয়েছে। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার প্রকৌশলী আহসান
হাবীব স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাকে বহিস্কার করেন। গত ১৯ জুন ওই শিক্ষকের
বিরুদ্ধে কোতয়ালী থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী।
আজ শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের সহকারী পরিচালক
হায়াতুজ্জামান মুকুল বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, উপাচার্যর নির্দেশক্রমে
রেজিস্টার প্রকৌশলী আহসান হাবীব স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ
মাহফুজ আল হাসানকে সাময়িক বহিস্কার করেন।
সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের সহকারী
অধ্যাপক সৈয়দ মাহফুজ আল হাসানের বিরুদ্ধে ‘ধর্ষণের অভিযোগ করেছে একই
বিভাগের মাস্টার্সের এক ছাত্রী। ওই ছাত্রী গত ১৯ জুন কোতয়ালী থানায়
দায়েরকৃত মামলায় বলেন, পড়াশুনার সুবাদে যশোর শহরের পালবাড়ি এলাকায় বাসা
ভাড়া করে থাকেন। বছর দুয়েক আগে থেকে শিক্ষক তার বাসায় আসা-যাওয়া করতেন। এর
সূত্র ধরে তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করেন।
সর্বশেষ ১৬ ফেব্রুয়ারি তাকে ধর্ষণ করেন। কিন্তু বিয়ের প্রলোভন দেখালেও
শেষ পর্যন্ত শিক্ষক তাকে বিয়ে করতে রাজি হননি। তাই বাধ্য হয়ে তিনি আইনের
আশ্রয় নিয়েছেন। এর আগে গত ১০ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে
শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন ওই শিক্ষার্থী। তার অভিযোগের ভিত্তিতে
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মাইক্রো বায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ইকবাল কবির
জাহিদকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে।
প্রায় চার মাসেও তদন্ত কমিটির রিপোর্ট দিতে পারেনি। এছাড়াও বাংলাদেশ
মহিলা পরিষদ যশোর শাখাও অভিযোগ দেয়া হয় ওই সময়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও
মহিলা পরিষদের অভিযোগের পরেও কোন ব্যবস্থা না হওয়ায় গত ১৯জুন কোতয়ালী থানায়
ওই ছাত্রী মামলা করেন। মামলার পর দেশের শিক্ষাঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
এরপর ২০জুন যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা
সম্পন্ন হয়।
শুক্রবার শিক্ষক মাহফুজ আল হাসান তার অনুসারী কতিপয় শিক্ষার্থীদের দিয়ে
যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করান। সংবাদ
সম্মেলনে আসা শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের প্রশ্নের কোন সঠিক উত্তর দিতে
পারেনি। সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করে শেষ রক্ষা করতে পারলেন না শিক্ষক
সৈয়দ মাহফুজ আল হাসান। শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে সাময়িক
বহিস্কার করে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন